,

আজও অপেক্ষায় নিখোঁজ ১০ জেলের স্বজনরা

বিডিনিউজ ১০ ডেস্কপ্রচণ্ড ঝড়ের কবলে পড়ে ট্রলারসহ ডুবে যাওয়ার এক বছর পার হলেও এখনও ফিরে আসেনি ১০ জেলে। ঘটনার পরই ট্রলার মালিক, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান করেও কোনো লাভ হয়নি, কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি তাদের। জেলেরা ফিরে না আসায় আজও অপেক্ষায় রয়েছেন স্বজনরা।

২০১৮ সালের ২১ জুলাই সকালে হঠাৎ গভীর সমুদ্রে প্রচণ্ড ঝড়ের কবলে পড়ে শাহিন ফিটারের মাছ ধরা একটি ট্রলার ডুবে যায়। ওই ট্রলারে থাকা ১৮ জেলে নিখোঁজ হয়। কয়েকদিন পর ১৮ জনের মধ্যে ৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও একই গ্রামের ১০ জনের আজও খোঁজ মেলেনি। তাদের সবার পরিবারেই চলছে আহাজারি, রয়েছেন ফিরে আসার প্রতীক্ষায়।

বাদুরতলা গ্রামে সরেজমিনে দেখা যায়, এক বছর আগে সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে স্বজনরা অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন। কোনমতে তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায় এমনভাবে সংসার চলে। অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

কথা হয় নিখোঁজ জেলে পরিবারে মোসা. রিনা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, এক বছর ধরে স্বামী নাই। ছোট বাচ্চাডা নিয়া খুব কষ্টে দিন কাটাইতাছি। মোর স্বামী এখনো বাইচ্যা আছে কিনা জানিনা। মইর‌্যা গ্যালেও লাশটা চাই। তবু কবরডা দেইখ্যাও শান্তি পামু।

নিখোঁজ অপর জেলে হিরু মিয়ার স্ত্রী শারমিন বেগম বলেন, মাইয়াডারে ঘুম পড়াইয়া সাগরে যাইয়্যা আর ফিরা আসে নাই। মাইয়াডায় বাবা বাবা ডাকে। কিন্তু বাবা আসে না।

বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ঝড়ের পরপরই সাগরে প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা অনুসন্ধান চালিয়েছি, কয়েকজনকে জীবিত ও মৃত উদ্ধার করলেও বাকি ১০ জনের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে আমাদের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।

ট্রলার মালিক মো. শাহিন ফিটার বলেন, এখনও নিখোঁজদের অনুসন্ধান চলছে, এরই মধ্যে যদি তারা মারা গিয়ে থাকে তাহলে তো আর তাদের ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না। তবে আমাদের পক্ষ থেকে সব সময় তাদের পরিবারের প্রতি খেয়াল রাখা হচ্ছে। ঈদুল ফিতরের জন্য পরিবারের সদস্যদের নগদ টাকা, কাপড় ও নাস্তা সামগ্রী দিয়েছি। আসন্ন ঈদুল আজহায়ও তাদের সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত আছি।

এই বিভাগের আরও খবর